প্রাথমিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সংস্কার উপদেষ্টা কমিটি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও খাতের সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
কমিটির আহ্বায়ক ড. মঞ্জুর আহমেদ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
পররাষ্ট্র একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. মঞ্জুর আহমেদ বলেন, কমিটি আটটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে একশোর বেশি মূল ও পরিপূরক সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ তাৎক্ষণিক, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনার ভিত্তিতে প্রণীত হয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিশুদের বাংলা ও গণিতে মৌলিক দক্ষতা অর্জনের ওপর, যা প্রাথমিক শিক্ষার মূল লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। পাশাপাশি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব বিদ্যালয়কে এক শিফটে রূপান্তর করা এবং শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৩০ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, প্রতিবেদনটি স্কুলে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য স্থানীয়ভাবে পারা-শিক্ষক (শিক্ষাগত সহকারী) নিয়োগ, মিড-ডে মিল চালু, খাতা, কলম, ব্যাগ বিতরণ এবং চরম দরিদ্র পরিবারের শিশুদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের সুপারিশ করেছে।
কমিটি স্কুল বহির্ভূত ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর একটি মডেল তৈরি, শ্রমজীবী শিশু, প্রতিবন্ধী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য শিক্ষা সুযোগ বৃদ্ধি এবং লিঙ্গ সমতার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে।
ড. মঞ্জুর আহমেদ বলেন, শিক্ষা সংস্কারের জন্য প্রস্তাবিত সুপারিশের বিষয়ে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং একটি সময়সীমাবদ্ধ সমন্বিত বাস্তবায়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
সরকার গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সাত সদস্যের এই উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. মঞ্জুর আহমেদ।