বাংলাদেশ নভেম্বর মাসে ভারতের আদানি পাওয়ারের প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস করেছে, যা ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে। এই হ্রাসের ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ জ্বালানি তেলে আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত আদানি পাওয়ারের ১,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্ল্যান্ট গত মাসে পাওনা নিয়ে বিরোধের কারণে হঠাৎ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেয়। ২০১৭ সালে এই প্ল্যান্ট বাংলাদেশের সাথে ২৫ বছরের একটি চুক্তি করেছিল, যা সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনের সময় সম্পাদিত হয়।
বিদেশি মুদ্রার ঘাটতিতে ভুগতে থাকা বাংলাদেশ আদানি পাওয়ারকে তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহের মূল্য হ্রাস করার অনুরোধ জানিয়েছে, যা দেশের অন্যান্য উৎসগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। আদানির গড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট, যা পুরো উৎপাদন বাংলাদেশে সরবরাহ করতে বাধ্য, হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির আগের বারো মাসে দেশের মোট বিদ্যুতের প্রায় ৯% সরবরাহ করেছিল।
ফেডারেল বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি আঞ্চলিক কমিটির তথ্য অনুযায়ী, গড্ডা প্ল্যান্ট নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে ৪৫০ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে, যা বার্ষিক ভিত্তিতে ৩২.৮% হ্রাস।
এটি আদানি প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে আমদানির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় মাসিক হ্রাস। পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্যুৎ কমিটির তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরের সরবরাহের মাত্রা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন।
শীতকালে মৌসুমী কম চাহিদার কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার সাধারণত হ্রাস পায়। তবে বাংলাদেশ ৫.৬% বার্ষিক বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ এবং আদানি পাওয়ার থেকে কম আমদানির কারণে সৃষ্ট শূন্যতা মোকাবিলায় জ্বালানি তেল-ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টে নির্ভরশীল হয়েছে।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানি তেলের ব্যবহার নভেম্বর মাসে ৪৭.৮% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা টানা তিন মাসের প্রবৃদ্ধি এবং পূর্ববর্তী ২১ মাসের ধারাবাহিক হ্রাসের পর দেখা গেছে। একই সময়ে, প্রাকৃতিক গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন টানা পাঁচ মাসের পতনের পর নভেম্বর মাসে ১০% এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন টানা তিন মাস ধরে হ্রাস পেয়েছে।