কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে শতাধিক বিক্ষোভকারী জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা এবং নারীদের হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হন। বিক্ষোভকারীরা শহরের রাস্তায় শিঙা বাজিয়ে এবং “নারীদের হত্যা বন্ধ করুন” ও “তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিত” স্লোগান দিয়ে মার্চ করেন। প্রতিবাদটি আরও জোরালো হয় যখন তারা পার্লামেন্ট ভবনের দিকে এগিয়ে যায়। তবে পুলিশ বারবার হস্তক্ষেপ করে, টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে এবং অন্তত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে, যার মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কেনিয়ার নির্বাহী পরিচালক ইরুংগু হাউটনও ছিলেন।
মোমবাসা এবং লোডওয়ার শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে, যা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং কেনিয়া ল’ সোসাইটি পুলিশের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে একে গণতান্ত্রিক নীতিমালা ও মানবাধিকারের সরাসরি লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা গ্রেপ্তার ও বলপ্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে এবং একে প্রতিবাদকারীদের জন্য “ভীতিকর বার্তা” বলে উল্লেখ করেছে।

অ্যাক্টিভিস্ট মুইকালি মুএনি, যিনি পুলিশের হস্তক্ষেপে গলায় আঘাত পেয়েছেন, তার হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “নারীদের সুরক্ষার পক্ষে কথা বলার সময় আহত হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। যদি প্রেসিডেন্ট নারীদের হত্যা বন্ধ করতে সত্যিই আগ্রহী হন, তবে তাকে আজ আমাদের উপর নির্যাতন করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
সম্প্রতি, প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো নারীদের হত্যার বিরুদ্ধে প্রচারাভিযানের জন্য ৭ লাখ ডলারেরও বেশি বরাদ্দ করেছেন এবং জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতাকে “দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছেন। কেনিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯৭ জন নারী ফেমিসাইডের শিকার হয়েছেন। পূর্ববর্তী পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২২ সালে ৭৫টি এবং ২০২১ সালে ৪৬টি ফেমিসাইড হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা এবং দুর্বল আইনগত সুরক্ষা কেনিয়ায় জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ হারের প্রধান কারণ। গবেষণায় আরও জানা গেছে, তিনজনের একজন কেনিয়ান নারী ১৮ বছরের আগে নির্যাতনের শিকার হয়, যা প্রধানত পুরুষ সঙ্গী বা পুরুষ আত্মীয়দের দ্বারা ঘটে।