Edit Content

আল-আসাদ মস্কোতে: রাশিয়ান সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন

A view shows a damaged poster of Syria's President Bashar al-Assad in Aleppo [File: Mahmoud Hassano /Reuters]
Share the News

সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও তার পরিবার রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। রাশিয়ান সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাদের “মানবিক কারণে” এই আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

ইন্টারফ্যাক্স, তাস এবং রিয়া নভোস্তি সংস্থাগুলো রোববার জানায়, আল-আসাদের পরিবার রাশিয়ায় পৌঁছেছে। এর আগে, বিরোধী বাহিনী দামেস্ক দখল করে এবং দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে আল-আসাদের সরকারকে উৎখাত করার ঘোষণা দেয়।

আল-আসাদের সঠিক অবস্থান স্পষ্ট ছিল না। কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়, তাকে রাশিয়ার একটি সামরিক বিমানে লাতাকিয়ার ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বিমানটি ট্রান্সপন্ডার বন্ধ রেখে উড়েছিল বলে ধারণা করা হয়। মস্কো থেকে আল জাজিরার ইউলিয়া শাপোভালোভা জানান, বিবিসির রাশিয়ান সার্ভিসও একই ধরনের তথ্য প্রকাশ করেছে।

হোয়াইট হাউস থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আল-আসাদ কোথায় আছেন তা নিশ্চিত নয়, তবে “তার মস্কোতে থাকার সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে।” বাইডেন আরও বলেন, “সরকার পতন একটি ন্যায়বিচারের মাইলফলক। এটি সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ, তাদের দেশের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যত গড়ার।”

রোববারের শুরুতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আল-আসাদ পদত্যাগ করেছেন এবং সিরিয়া ত্যাগ করেছেন। বিরোধী বাহিনীর বিজয় ঘোষণার পর দামেস্কের বাসিন্দাদের রাস্তায় উল্লাস করতে দেখা যায়। অন্যদিকে, আল-আসাদের বিলাসবহুল বাসভবন লুট করে জনতা। বিদ্রোহী দলগুলি রাজধানী “মুক্ত” বলে ঘোষণা করে।

রাশিয়ান সংবাদ মাধ্যমগুলো আরও জানায় যে, সিরিয়ার বিরোধী নেতারা রাশিয়ান সামরিক ও কূটনৈতিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। ক্রেমলিনের একটি সূত্র তাস সংবাদ সংস্থাকে জানায়, “রাশিয়ান কর্মকর্তারা সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তারা রাশিয়ান ঘাঁটি ও কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন।”

যদিও রাশিয়া সিরিয়ার যুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, যেখানে তাদের সামরিক হস্তক্ষেপ ২০১৫ সালে আল-আসাদের পক্ষে যুদ্ধের গতিপথ পরিবর্তন করে। সাম্প্রতিক বিদ্রোহীদের অগ্রগতির আগে পর্যন্ত রাশিয়ার সমর্থন আল-আসাদকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সহায়তা করেছিল।

রোববারের ঘটনাগুলো ১৩ বছরের যুদ্ধে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটিয়েছে, যা আল-আসাদ পরিবারের ৫০ বছরের বেশি সময়ের শাসনেরও শেষ টেনে দিয়েছে। ২০১১ সালে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দিয়ে শুরু হওয়া এই সংঘাত দ্রুতই একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে পরিণত হয়। এতে বিদেশি শক্তিগুলো জড়িয়ে পড়ে, লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারায় এবং লাখ লাখ মানুষ শরণার্থী হয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।