মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র সংঘাত থেকে পালিয়ে প্রায় ৮,০০০ রোহিঙ্গা সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
“আমার কাছে তথ্য আছে যে প্রায় ৮,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আমরা আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব,” আজ বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন তিনি।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ নীতিগতভাবে আর কোনো জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলেও তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ অতিরিক্ত শরণার্থীদের মানবিক আশ্রয় প্রদানের ক্ষমতা আর নেই।
হোসেন বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করা হয়েছে, তবে পুরোপুরি সুরক্ষিত করা কঠিন।
“সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়,” তিনি বলেন, তবে সরকার রোহিঙ্গাদের প্রবেশ ঠেকাতে পদক্ষেপ নেবে বলেও জানান।
উপদেষ্টা বলেন, তিনি আগামী দুই দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে একটি বৈঠক করবেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রশ্নে তিনি রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ অংশে নিয়ন্ত্রণকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন, যাতে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পথ সুগম করা যায়।
“আমি মনে করি এটাই এগিয়ে যাওয়ার পথ, তবে আমাদের দেখতে হবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কতটুকু করা সম্ভব,” তিনি বলেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলায় এক মিলিয়নেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে, যাদের অধিকাংশই মিয়ানমারের সামরিক দমন-পীড়নের পর পালিয়ে আসে। জাতিসংঘ এই দমন-পীড়নকে “জাতিগত নির্মূলের পাঠ্যপুস্তক উদাহরণ” বলে অভিহিত করে, এবং অন্যান্য মানবাধিকার গোষ্ঠী এটিকে “গণহত্যা” হিসেবে উল্লেখ করেছে।
গত সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাও তাদের দেশে ফিরে যায়নি। মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, নিরাপত্তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের আস্থার অভাবে প্রত্যাবাসনের দুটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।