বাংলাদেশ বৈশ্বিক ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মোকাবিলায় এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি ব্রাজিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে উন্মোচিত গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার অ্যান্ড পভার্টি-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। এই ঐতিহাসিক উদ্যোগ ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য নির্মূলের লক্ষ্যে কাজ করবে।
বাংলাদেশ এ জোটের বোর্ড অফ চ্যাম্পিয়ন্স-এর সম্মানজনক সদস্য হিসেবেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই জোট ১৪৮টি দেশ, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওকে একত্রিত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও মানব মর্যাদার লক্ষ্যে কাজ করছে।
জি-২০ সামাজিক সম্মেলনে ১৫ নভেম্বর দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস “তিন শূন্যের বিশ্ব” গড়ার ভিশন তুলে ধরেন, যা ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করে। তিনি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
জোটের মূল কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্থ সহায়তা কর্মসূচি এবং স্কুল খাবার উদ্যোগের মতো কার্যকর পদ্ধতি, যা দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মোকাবিলায় একটি বাস্তবসম্মত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা হিসেবে পরিচিত।
এর আগে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস. মুরশিদ ব্রাসিলিয়াতে অনুষ্ঠিত জি-২০ মন্ত্রী পর্যায়ের নারী ক্ষমতায়ন সম্মেলন-এ বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং নারী সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা তুলে ধরেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বাংলাদেশ একমাত্র এশীয় দেশ হিসেবে ২০২৪ সালের জি-২০ সভাপতিত্বকারী ব্রাজিলের আমন্ত্রণে নারী ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন কর্মদলের বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মোকাবিলা বিষয়ক টাস্ক ফোর্সেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে দেশের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে তুলে ধরে।
ব্রাজিলে বাংলাদেশের দূতাবাস জি-২০ কাঠামোর অধীনে দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নে দেশের নেতৃত্ব স্বীকৃত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স-এ বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি বৈশ্বিক বৈষম্য হ্রাস, ক্ষুধা মোকাবিলা এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রভাবশালী অংশীদারিত্ব গড়তে দেশের অবস্থানকে আরো দৃঢ় করেছে।