বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী আজ ভোরে রাজধানীর উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
তার প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম জানান, আজ ভোর ৩টা ১৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২ অক্টোবর ফুসফুসের সংক্রমণের কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এর আগে তার মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী জানিয়েছিলেন, তার বাবা আগে থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী তার স্ত্রী হাসিনা ওয়ারদাহ চৌধুরী, এক ছেলে মাহি বি চৌধুরী, দুই মেয়ে মুনা চৌধুরী ও ডা. শায়লা চৌধুরী, নাতি-নাতনিসহ বহু আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করা বদরুদ্দোজা চৌধুরী একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক, প্রখ্যাত অধ্যাপক এবং খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি ১৯৪৭ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন এবং ১৯৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি লন্ডন, এডিনবরা এবং গ্লাসগোতে রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানসের ফেলো (FRCP) ছিলেন এবং স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
১৯৭৮ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আহ্বানে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হন। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শিক্ষা মন্ত্রী, সংসদের উপনেতা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২০০২ সালে পদত্যাগ করেন। ২০০৪ সালে তিনি বিকল্প ধারা বাংলাদেশ নামক রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জানাজা তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জানাজা আজ সকাল ৮টায় উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা জোহর নামাজের পর ঢাকার বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার বায়তুল আতিক জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল সকাল ১০টায় শ্রীনগর স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং এর পর মুন্সীগঞ্জের দয়াহাটা, মাজিদপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।