দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এবং সরকারি প্রশাসনকে আরও জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ করতে সরকার পাঁচটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রত্যেকটি কমিশনে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে, তবে তাদের নাম এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, কমিশনগুলো ৩ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে এবং আগামী ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ছয়টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন, যার মধ্যে রয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, সরকারি প্রশাসন, সংবিধান এবং দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার সংস্কার।
নির্বাচনী সংস্কার কমিশন নেতৃত্ব দেবেন বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন নেতৃত্ব দেবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান, দুর্নীতিবিরোধী সংস্কার কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং সরকারি প্রশাসন সংস্কার কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন আবদুল মুইদ চৌধুরী।
কমিশনগুলোর পূর্ণ গঠন নিম্নরূপ:
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন: প্রধান: সুজনের বদিউল আলম মজুমদার। সদস্য: স্থানীয় সরকার ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব জেসমিন তুলী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল আলিম, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমান, প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিবীন, ইলেকট্রিক ভোটিং এবং ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
পুলিশ সংস্কার কমিশন: প্রধান: সফর রাজ হোসেন। সদস্য: অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল, প্রাক্তন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, প্রাক্তন অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী ও মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরুদ্দিন এলান এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন: প্রধান: আপিল বিভাগের প্রাক্তন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান। সদস্য: প্রাক্তন হাইকোর্ট বিচারপতি এমদাদুল হক ও ফারিদ আহমেদ শিবলী, প্রাক্তন জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, প্রাক্তন জেলা ও দায়রা জজ মাসদার হোসেন, সিনিয়র সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী তানিম হুসাইন শান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সাপান এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন: প্রধান: ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। সদস্য: প্রাক্তন মহাহিসাব নিরীক্ষক মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মোস্তাক খান, ব্যারিস্টার মাহদিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা শারমিন এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
সরকারি প্রশাসন সংস্কার কমিশন: প্রধান: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুইদ চৌধুরী। সদস্য: প্রাক্তন সচিব মোহাম্মদ তারেক ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া, জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মখলেছুর রহমান, প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান ও রিজওয়ান খায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের অধ্যাপক এ কে ফিরোজ আহমেদ এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।